বায়োমিল ১ বানানোর নিয়ম ও খাওয়ার নিয়ম

শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তার জন্য সর্বোত্তম খাবার হলো তার মায়ের বুকের দুধ। কিন্তু বিভিন্ন কারণবশত শিশু তার মায়ের বুকের দুধ খেতে পারেনা। তখন তাকে বাজার থেকে মায়ের দুধের বিকল্প হিসেবে শিশুকে বিভিন্ন ধরণের গুড়া দুধ বা পাউডার দুধ খাওয়ানো হয়।
বায়োমিল ১ খাওয়ার নিয়ম
প্রিয় পাঠক, আপনি যদি আপনার বাচ্চাকে খাওয়ানোর জন্য বায়োমিল ১ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কারণ এই আর্টিকেলটিতে বায়োমিল ১ বানানোর নিয়ম ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। সেইসাথে আর্টিকেলটিতে বায়োমিল ১ এর বর্তমান দাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাহলে চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক।

বায়োমিল ১ খাওয়ার বয়স

মায়ের দুধের বিকল্প হিসেবে বায়োমিল ১ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্য। কারণ এই সময়টিতে শিশু তার মায়ের দুধ খেতে না পারার কারণে তাকে এটি খাওয়ানো হয়। মাতৃদুগ্ধের বিকল্প হিসেবে বিশেষ ফর্মূলায় এই দুধ তৈরি করা হয়। এই দুধে রয়েছে মায়ের দুধের সকল পুষ্টি উপাদান যা শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় রাখতে সাহায্য করে থাকে। বায়োমিল ১ খাওয়ার বয়স হিসেবে নবজাতকের খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়।

জন্মের পর ছয় মাস পর্যন্ত একটি শিশুকে বায়োমিল ১ খাওয়ানো হয়। নবজাতকের জন্য যেসকল পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন সেইসব পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য কৃত্তিমভাবে বায়োমিল ১ প্রস্তুত করা হয়েছে। বায়োমিল ১ এ শিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। যখন কোনো নবজাতক তার মায়ের দুধ খেতে পারে না তখন তাকে ডাক্তারেরা বায়োমিল ১ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। জন্মের পর থেকে ৬ মাস বয়স পর্যন্ত নবজাতককে বায়োমিল ১ খাওয়ানো হয়।

বায়োমিল ১ খাওয়ার নিয়ম

নবজাতকের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম হওয়ার কারণে তারা অতি দ্রুতই অসুস্থ হয়ে পড়ে। নবজাতককে কোনো খাবার খাওয়ানোর ক্ষেত্রেও আমাদেরকে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। নবজাতককে খাওয়ানোর জন্য সকল প্রকারের খাবার যদি সঠিক নিয়ম অনুযায়ী খাওয়ানো উচিত। আপনি যদি আপনার শিশুকে বায়োমিল ১ খাওয়ার জন্য এর নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলের এই অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন বায়োমিল ১ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
  • বাচ্চার বয়স ১-২ সপ্তাহ হলে, দুই থেকে তিন চামচ বায়োমিল ১ দুধ তৈরি করে প্রতিদিন ৬ বার করে খাওয়াতে হবে।
  • বাচ্চার বয়স ৩-৪ সপ্তাহ হলে, শিশুকে চার চামচ বায়োমিল ১ দুধ তৈরি করে প্রতিদিন ৫ বার করে করে খাওয়াতে হবে।
  • বাচ্চার বয়স ২ মাস চলমান থাকাকালীন বাচ্চাকে ৫ চামচ করে বায়োমিল ১ প্রতিদিন পাঁচবার করে খাওয়াতে হবে।
  • বাচ্চার বয়স ৩ মাস চলাকালীন আগের তুলিনায় দুধের পরিমাণ বাড়িয়ে অর্থাৎ ছয় চামচ করে প্রতিদিন মোট পাঁচবার খাওয়াতে হবে।
  • বাচ্চার বয়স ৬ মাস হলে তাকে সাত চামচ করে বায়োমিল ১ দুধ তৈরি করে পাঁচবার করে খাওয়াতে হবে।
মনে রাখবেন শিশুকে বায়োমিল ১ বা অন্যান্য যেকোনো ধরণে ঔষধ কিংবা খাবার খাওয়ানোর আগে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিবেন। আর কোনো অবস্থাতেই বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে জোর করবেন না। এতে করে বাচ্চা অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।

বায়োমিল ১ বানানোর নিয়ম

শিশুর সুস্বাস্থ নিশ্চিতকরণে ও সঠিক পুষ্টি উপাদান নিশ্চিত করার জন্য বায়োমিল ১ প্রস্তুত করার সময় খুবই সতর্কতার সহিত সঠিক নিয়মে মেনে করতে হবে। সঠিক নিয়মে ও সঠিকভাবে বায়োমিল ১ দুধ প্রস্তুত না করলে শিশুর হজমে সমসস্যা হতে পারে।

বায়োমিল ১ বানানোর জন্য প্রথমেই যে পাত্রে দুধটি প্রস্তুত করা হবে তা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। ভালোভাবে পরিষ্কার ও জীবানুমুক্ত করার জন্য ফিডারটি গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। ভালোভাবে জীবানুমুক্ত করার জন্য ফিডার, চামচ ইত্যাদি সবকিছু গরম পানিতে ৫-১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে।

এরপর যে পানি ব্যাবহার করে পাউডার বায়োমিল ১ দুধ মেশানো হবে তা ভালোভাবে ফুটিয়ে নিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিতে হবে। তারপর পানি যখন কুসুম কুসুম গরম থাকবে তখন পরিমাণ মতো পানিতে শিশুর বয়স অনুযায়ী পরিমাণমতো দুধ মিশিয়ে নিতে হবে। পানিতে দুধ মেশানোর সময় খেয়াল রাখবেন যেন কোনো অবস্থাতেই গুড়া গুড়া ভাব না থাকে। তাছাড়া শিশুকে দুধ খাওয়ানোর পর শিশু বমি করতে পারে বা অন্যান্য বদহজমজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

বায়োমিল ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

যেহেতু নবজাতক অর্থাৎ শুণ্য থেকে ছয় মাস বয়সের শিশুকে তাই এটি খুব সাবধানতা অবলম্বন করে খাওয়াতে হবে। এই সময়ে একটি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে থাকে, তাই তারা খুব সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়ে।

যদি কোনো শিশুকে সঠিক নিয়ম অনুসারে অসাবধানতার সহিত বায়োমিল ১ খাওয়ানো হয় তাহলে তার শরীরে বিভিন্ন ধরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন, শিশুকে জোরপূর্বক বায়োমিল ১ খাওয়ানো হলে তার বদহজম হয়ে বমি হতে পারে। শিশুকে খাওয়ানোর জন্য দুধ প্রস্তুত করার সময় যদি পানির সাথে দুধ ভালোভাবে মিশ্রিত না হয় অর্থাৎ যদি দুধের মধ্যে গুড়া গুড়া ভাব থাকে তাহলে শিশুর ওই দুধ হজম করতে সমস্যা হবে।

মূলত বায়োমিল ১ এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু যদি শিশুকে অনিয়ম করে অসাবধান হয়ে এটি খাওয়ানো হয় তাহলে এর বিভিন্ন ধরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

পরামর্শ

প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলটিতে বায়োমিল ১ বানানোর নিয়ম, খাওয়ার নিয়ম ও এর বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। নবজাতকের সুস্বাস্থ্যের জন্য সকল প্রকার কাজ অতি সাবধানতা অবলম্বন করে করতে হবে।

আশা করছি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে। আর্টিকেল সম্পর্কিত কোনো তথ্য বা মতামত জানতে ও জানাতে নিচে কমেন্ট করুন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন। এবং নিয়মিত দৈনন্দিন জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরণের টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url